Surah Fatiha Bangla
সূরা আল ফাতিহা, পবিত্র কুরআনের প্রথম সূরা। সূরা ফাতিহা নাজিল হয়েছিলো মক্কায়, এই সূরায় আয়াত সংখ্যা ০৭ এবং রুকু সংখ্যা ০১, এই সূরার ফাতিহা শব্দটি আরবি “ফাতহুন” থেকে এসেছে যার অর্থ হলো “উন্মুক্তকরণ” ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে বান্দার জন্যে এই সূরা উপহার এবং উপকরণ স্বরূপ। সূরা আল ফাতিহা শুরু হয়েছে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” দিয়ে। মাক্কীয় সূরায় শ্রেণীবদ্ধ এই সূরা। এই সূরার আরোও একটি পরিচয় রয়েছে, এই সূরাকে সাফা’য় বলায় হয়, এই সূরায় আল্লাহর পক্ষ থেকে হরেক রোগের নিধন এর প্রক্রিয়া দেওয়া হয়েছে।
Surah Fatiha Bangla – সূরা আল ফাতিহা
আয়াত সমূহ ও অর্থ
بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
অনুবাদঃ পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে
ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ رَبِّ ٱلْعَالَمِينَ
উচ্চারণঃ আলহামদুলিল্লাহ-হি রব্বিল আ’লামীন।
অনুবাদঃ সমস্ত প্রশংসা জগতেসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।
ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
উচ্চারণঃ আর রাহমা’নির রাহীম।
অনুবাদঃ অনন্ত দয়ালুময়, অতীব দয়ালু।
مَالِكِ يَوْمِ ٱلدِّينِ
উচ্চারণঃ মা’লিকি ইয়াওমিদ্দীন
অনুবাদঃ প্রতিফল দিবসের মালিক।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
উচ্চারণঃ ইয়া’কা না’বুদু ওয়া ইয়া’কানাছতা’ঈন।
অনুবাদঃ আমরা শুধু আপনারই দাসত্ব করি এবং শুধু আপনারই নিকট সাহায্য কমনা করি।
ٱهْدِنَا ٱلصِّرَاطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ
উচ্চারণঃ ইহদিনাসসিরা -তাল মুসতাকীম
অনুবাদঃ আমাদের সরল পথনির্দেশ করুণ।
صِرَاطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ
উচ্চারণঃ সিরা-তাল্লাযীনা আন’আম তা’আলাইহিম
তাদের পথে, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন।
غَيۡرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا اَ۬لضَّآلِّينَ
উচ্চারণঃ গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম ওলাদ্দল্লীন। আমীন
অনুবাদঃ এবং তাদের পথে নয় যারা আপনার ক্রোধের শিকার ও পথভ্রষ্ঠ। কবুল করুণ|
সূরা ফাতিহা বাংলা অর্থ সহ শুনুন।
Surah Fatiha Bangla Anubad – সূরা ফাতিহা বাংলা অনুবাদ
- পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে
- সমস্ত প্রশংসা জগতেসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।
- অনন্ত দয়ালুময়, অতীব দয়ালু।
- প্রতিফল দিবসের মালিক।
- আমরা শুধু আপনারই দাসত্ব করি এবং শুধু আপনারই নিকট সাহায্য কমনা করি।
- আমাদের সরল পথনির্দেশ করুণ।
- তাদের পথে, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন।
- এবং তাদের পথে নয় যারা আপনার ক্রোধের শিকার ও পথভ্রষ্ঠ। কবুল করুণ
নামকরণ
ফাতিহা আরবি ‘ফাতহুন’ শব্দের থেকে নেওয়া হয়েছে যার অর্থ ‘উন্মুক্তকরণ’ এই সূরা সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে যার মানে ভূমিকা বুঝানো হয়।
হারিসে এই সূরার আরও ৪টি নাম উল্লেখ রয়েছে যার মধ্যে একটি ‘উম্মুল কিতাব’ অন্যগুলো ‘ফাতিহাতুল কিতাব’ সূরাতুল হামদ’ ‘সূরাতুস সালাত’ ‘আস-সাবয়ুল মাসানী’।
নাযিল হওয়ার সময়কাল
সূরা ফাতিহা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াতের প্রথম যুগের সূরা। এবং হাদিসের নির্ভরযোগ্য বর্নণা থেকে পাওয়া যায় এটাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা। এর আগে কিছু বিচ্ছিন্ন আয়াত নাযিল হয়েছিলো শুধু মাত্র। যেমনঃ সূরা আলাক্ব, মুযযাম্মিল ও মুদ্দাসসির ইত্যাদি।
সূরা ফাতিহার ফযীলতঃ
এ সূরার অনেক ফযীলত রয়েছে, এর মধ্য হতে নিন্মে বর্ণনা করা হলো।
১- উবাই ইবনে কা’ব রাঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আল্লাহ উম্মুল কুরআনের মত তাওরাত ও ইঞ্জীলে কিছু নাযিল করেননি। এটাকেই বলা হয়, আস-সাবউল মাছানী (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত), যাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বন্টন করা হয়েছে। আর বান্দার জন্য তাই রয়েছে, সে যা চাইবে। [১৩]
২- ইবনু আব্বাস রাঃ বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নিকট জিবরাঈল আঃ ছিলেন, হঠাত জিবরাঈল আঃ উপর দিকে এক শব্দ শুনতে পান এবং চক্ষু আকাশের দিকে করে বললেন, এ হচ্ছে আকাশের একটি দরজা যা পূর্বে কোন্দিন খোলা হয়নি। সে দরজা দিয়ে একজন ফেরেশতা অবতীর্ণ হ’লেন। এবং রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে বললেন, ‘আপনি দু’টি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুণ। যা আপনাকে প্রদান করা হয়েছে। তা আপনার পূর্বে কোন নবীকে প্রদান করা হয়নি। তা হচ্ছে সূরা ফাতিহা এবং সূরা বাক্বারার শেষ দু’আয়াত। তুমি সে দু’টি হ’তে কোন অক্ষর পড়লেই তার প্রতিদান তোমাকে প্রদান করা হবে। [১৯]
উপসংহার
সুরা ফাতিহার সবচেয়ে পরিচিত নাম সূরাতুল ফাতিহা। এ সূরার স্থান, মর্যাদা, বিষয়াবস্তু, ভাবভাষা, প্রতিপাদ্য এসবের প্রতি লক্ষ্য রেখে এর বিভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে এবং সব গুলো নাম এর সূরার সাথে সামঞ্জস্য। এর সূরার গুরুত্ব অপরিশীম এবং অতুলনীয়।
Related Post:
Pingback: Ayatul Kursi Bangla -আয়াতুল কুরসী - বাংলা উচ্চারণ অনুবাদ ও ফজীলত